স্বাবলম্বিতার এক দিক

আর্থিক স্বাবলম্বিতার দিকে ধাবমান কিছু মানুষের মনে জমে আছে বেশ খানিক অভিমান ,
স্বেচ্ছাবৃত্তি ও দাসত্বের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে, ভুলে যায় টিপ্পনি আর মন্তব্য করা আমার সমাজ,
অনেকে বলে, সেইতো একই কাজই করছে, মায়না পাচ্ছে আজ ক পয়সা এই যা,
কিন্তু ভোলে, জোর করে চাপিয়ে দেওয়া বা কোনো কাজ করতে বাধ্য করা কি হতে পারে, কখনো কোনো সম্পর্কের তর্জমা?

আচ্ছা, আবেগের কি কোনো সংজ্ঞা হয়? হয় কি কোন আবেগের দ্বারা কোন কোন কাজ করা যেতে পারে তার সম্ভাব্য সম্পূর্ণ তালিকা?
যেখানে নিজের ইচ্ছে নেই, সম্মান নেই, সেখানে সহ্য করার বা মেনে নেওয়ার আর মানিয়ে নেওয়ার নেই কি কোনো সীমা?
কোনো মানুষ কোনো মানুষের কেনা সম্পত্তি নয়, তবু আজও জোটে এরকম ব্যবহার,
সম্পর্কের শুরুটা তো এরকম ছিল না, তাহলে মাঝে কি হলো যে শুরু হলো অনুভূতিহীন, মান সম্মানহীন, যেন কোনো পশু আর তার পাশবিকতা,

সম্মান রোজগার করতে হয়, কেউ তো দিয়ে দেয় না,
সময় পাল্টাচ্ছে, সমস্তকিছুর তর্জমা পাল্টাচ্ছে আসে পাশের আমার আপনার সমাজটা,
আর্থিক স্বাবলম্বিতা কে আজ অনেক বড়ো করে দেখার আর দেখানোর কারণটা খুব সহজ, ওটা এনে দেয় একটা অদৃশ্য নিরাপত্তা,
নিজের প্রয়োজনীয়তা মেটানোর ক্ষমতা সকল মানুষেরই রয়েছে, ওটা কৃত্তিত্ব নয়, আবার নয় কোনো মানুষের দুর্বলতা,

নিত্য নৈমিত্তিকের মাধ্যমে বশ্যতা বা অধিকার জাহির করা আর দুর্বলের দুর্বলতার সুযোগ নেওয়া একই,
প্রত্যেকের উপলব্ধিতে থাকা উচিত যে চাকরি, ব্যাবসা আর সম্পর্ক এক জিনিস নয়, তারা যতই তোমার চোখে দেখতে লাগুক একই,
অর্থ আর সম্পদ কোনোদিনই সমাজে সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ছিল না কিন্তু ক্রমশ গুরুত্ব পাচ্ছে,
কারণ, জীবনে ভালোভাবে আনন্দে বাঁচাটুকুই শেষ কথা নয়, চাওয়া পাওয়া অর্থাৎ সম্পর্কের প্রেক্ষাপটের তালিকা আজ অনেক বড়ো হচ্ছে,

এখন প্রশ্ন, বড়ো তালিকা ছোট্ট মন কিভাবে সামলাবে? শুধু আবেগ দিয়ে পরিকল্পনা সম্ভব নয়, মস্তিষ্কের অনুপ্রবেশ প্রয়োজন, কে বোঝাবে ?
মস্তিস্ক কি সম্পর্ককে সেভাবে দেখবে, যেভাবে মন এতদিন আবেগ দিয়ে দেখে এসেছে ?
মস্তিস্ক কেন খুঁজবে, কারণ বিশ্লেষণ করবে , ক্ষমতার সাথে সমীকরণ তৈরী করবে , আর ক্ষমতা অনুযায়ী সম্মান , আবেগ ইত্যাদি বিতরণ করবে,
সম্পর্কগুলো কনট্র্যাক্ট নোটের মতো হবে, দেখতে শুনতে আর তার পরিণতি হাতে পেতে কি সমান ভালো লাগবে ?

ক্ষমতার বিচারে অর্থ আর সম্পত্তি নিজেদের আংশীদারিত্বের নথিভুক্তিকরণ ঘটাবে ,
সম্পর্কে বিচার হবে ,কার কত অবদান , কার কত গুরুত্ব , মানুষগুলো সীমাবদ্ধ , ছোট কিন্তু বিচারপর্ব চালাবে সর্বত্র ,
ধ্বংসস্তূপের ওপরে দাঁড়িয়ে কতগুলো জীবন নিজেদের পরিণতি লিখবে,
আর সমাজ , সীমিত শিক্ষা, সীমিত ক্ষমতা আর অধৈর্যের হাত ধরে, মন্তব্য করবে, তকমা দেবে আর দেখবে।

শিক্ষা প্রয়োজন, সময়ের পরিবর্তনকে উপলব্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য,
শিক্ষা প্রয়োজন, সম্পর্কগুলোর হাত ধরে আরো ভালো থাকার জন্য ,
শিক্ষা প্রয়োজন অর্থ, সম্পত্তিকে নিজেদের প্রয়োজনে কাজে লাগানোর জন্য ,
সব মানুষ হিংসে করবেই, শিক্ষার প্রয়োজন তাদের আর তাদের উদ্দেশ্যদের চিনে নেওয়ার জন্য।

Leave a Reply