পরিবর্তন

একই জগতে চিন্তার পার্থক্য, কর্মে পরিবর্তন নিয়ে আসে,
পার্থক্য দৃষ্টিকোণে, সময় অনুপাতে পার্থক্য বাস্তবায়িত করে,
আপাত দৃষ্টিতে সীমিত রসদ আর বন্ধ রাস্তা বেশি চোখে পড়ে,
হঠকারিতার হাত ধরে মন, এখুনি পাওয়া আর এক্ষুনি গন্তব্যে পৌঁছনোর বায়না ধরে,

নানাবিধ কাল্পনিক প্রতিযোগিতা কল্পনায় চলছে চারপাশে,
নানান অভীষ্ট সাধনের লক্ষ্যে সময়কে বশে রাখার চেষ্টা চলছে,
গুরুত্ব অনুসারে কেউ কম বয়সে কাজে যোগ দিচ্ছে আবার কেউ বিবাহ বন্ধনে হচ্ছে আবদ্ধ,
নিজের গল্পের মাধ্যমে অন্যের ঘাড়ে সময় নিঃস্বাস নিয়ে চলেছে অনবরত,

সময়কে পেছনে রাখার দৌড়ে সবাই ব্যস্ত ঠিক,
একমাত্র অভীষ্টসিদ্ধের দৌড়ে সময় গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি পায় ঠিক,
ভর্ৎসনার শিকার হচ্ছে তারা, যাদের বাকিদের সাথে গতিটা ঠিক মিলছে না,
হতাশার হাতছানি তাদের জীবনে, যখনই চোখ মেলছে চারপাশে তারা,

গতিটা গুরুত্বপূর্ণ বেশি আজ, গুণমান নিয়ে কথা নেই প্রকাশ্যে,
ছাড়পত্রের আর্জি সেখানেই, যেখানে গুনমানকেন্দ্রিক বক্তব্যরা ভিড় করে,
ছাড়পত্রের মেয়াদ সাময়িক, সাময়িক আনন্দেরই চাহিদা বেশি,
নেশাগ্রস্ত চারপাশ নাকি এটাই নতুন স্বাভাবিক?

বেশি মুদ্রা ছাপা হলে মুদ্রাস্ফীতির যেমন পথ প্রশস্ত হয়,
একই দ্রব্যের জন্য খালি সময় অনুপাতে বেশি মুদ্রা খরচ করতে হয়,
গুণগত মান ছেড়ে বেড়ে চলেছে পরিমানের তোষণ ও গুরুত্ব,
পার্থক্য এটুকুই যে আগের পঞ্চাশ আজকের সত্তোরের সমতুল্য,

ক্ষিদে না বেড়ে চাহিদা বাড়ার সমীকরণটা খানিকটা এরকম,
প্রয়োজনীয়তা বাড়ছেনা, শুধু ভ্রমে ভ্রমিত দৃষ্টিকোণ,
তুলনা কখনো বয়সের মাধ্যমে, আবার কখনো অর্থের মাধ্যমের অবলম্বন,
সময় সবচেয়ে বড়ো হাতিয়ার, যখন উদ্দেশ্য দৃষ্টি সরিয়ে আকর্ষণ,

মৃত আর বোকা তারা যাদের কাছে বিনিয়োগ গুরুত্তপূর্ণ,
এক্ষুনি বড়ো লাভ করতে তারা ব্যর্থ, নিবেশক তাই ব্যবসায়ীদের দলে চুপ, অস্তিত্ব নিরর্থক মাত্র,
অভ্যেস, আয়তন, গুণমান ইত্যাদি আজ, দেখতে দেয় না,
কুয়াশা আজকের আকাশে মানেই কি কাল সূর্য উঠবে না ?

ভ্রমের মায়াজালে ইন্দ্রিয়জ্ঞান বিষবৃক্ষের জন্ম দিচ্ছে,
দশকের মধ্যে শতাব্দীর আভাস দেওয়ার চেষ্টা করছে,
কৃতিত্বের ভিড় আদৌ নাকি মিথ্যেরা বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে,
“নিজের মতো করে”, এর আড়ালে অনুকরণ ও অনুসরণ রাজত্ব করছে,

নিজস্বত্বতার উপলব্ধিতে বাধা, অনুকরণের রাস্তা প্রশস্ত,
সাবেকি অনুমতি আর ব্যর্থতার ভয়ে সবাই নাকি জর্জরিত,
উপলব্ধির ঘাটতি শুধুই নইলে ভয়ের উপস্থিতি সর্বত্র,
গন্তব্যে আজই পৌঁছতে হবে, নইলে কি সত্যিই সবাই ব্যর্থ?

ব্যর্থতা নামক ভ্রমে রাস্তাজ্ঞানহীন মানুষ,
আচরণ এমন করে যেন মূল্যহীন সবকিছু,
পড়ার অভ্যেস, শরীরের প্রতি যত্নের অভ্যেস প্রয়োজনীয় প্রতিক্ষনে,
সমাজের ব্যর্থতা নামক ভ্রম ছাড়া সমাজের প্রতিটা সফলতাই একবার হলেও দাঁড়াবে ব্যর্থতার মুখে,

এক্ষুনি সব পাওয়ার দৌড়ে সব্যসাচী হতে মানুষ ভোলে,
কর্মফল ভোগের সময় আবার, ছাড়পত্রের আর্জি করে,
সবার সাথে তালমিলিয়ে চলার আমরণ চেষ্টার ভিড়ে,
ভোলে, একমাত্র মৃত মাছেরাই শ্রোতের দিকে সর্বদা সাঁতার কাটে,

প্রতিযোগিতা গুণমানের হোক, পরিমানের দৌড় নাইবা থাকলো,
সব মানুষ সব কাজে পারদর্শী নয় যখন, তখন এক কাজে পারদর্শিতা বৃদ্ধি হোক,
বয়সের সাথে ঠিক সময় ঠিক কাজের বিচার বিবেচনায় মন দিতে নিতে,
প্রেম, আবেগ সবকিছুই তলানিতে ঠাঁই পায় সাবেকি নীতির ভিড়ে।

সমাজের নীতি মানার সাথে সময়কে বশে রাখার অন্তহীন চেষ্টাতে,
পরিবর্তিত মানসিকতার নাম, শুধুই দৃষ্টিহীনতা বেড়েছে ,
সাময়িক যৌবনে অধঃগামী সম্পদে নিবেশ,
ব্যবসা ঠেকছে তলানিতে, উর্দ্ধগামীতা ক্ষনিকের সমস্ত এক্ষুনি পাওয়ার দেশে,

পরিকল্পনাতে কল্পনা আর সময়ের পর্যাপ্ত নিবেশ,
নিয়মিত অনুশীলনের হাত ধরে দক্ষতা, বড়ো অভীষ্টকে ছোট ছোট ভাগে ভেঙ্গে,
কত পরিমান দক্ষতা ও গুন অর্জিত, দৃষ্টি শুধুই সেদিকে,
নিয়মিত মূল্যায়ন আনতে পারে স্থায়িত্ব, অন্যের পাশে নিজের গুরুত্ব বৃদ্ধির হাত ধরে,

পরিস্থিতি শুধুই সামঞ্জস্যতা বজায় রাখতে বলবে, সন্তুষ্টির দেবে স্বাদ,
মুছে ফেলার চেষ্টায় থাকবে প্রথম দিনের আবেগ ও গুরুত্বের মোটা দাগ,
চারপাশ দেখাবে এমন হলেও হতে পারতো,
পরিবর্তন তখনি যখন সমস্ত যদি, উপলব্ধির সাথে নদীর জলে ভেঁসে যেত।

2 thoughts on “পরিবর্তন”

Leave a Reply