ই এম আই

এখন ক্রয়ের সামর্থ্য নেই, কিন্তু কেনার খুব ইচ্ছে,
এখনই চাহিদা পূরণের জন্য জন্ম হলো ই এম আই ও  ক্রেডিট কার্ড বেসড সিস্টেম,
ধৈর্য কম কিন্তু স্বপ্নকে করতে হবে মুঠোবন্দি,
সন্তুষ্টি নেই, জীবনে সীমিত সময়ে চাহিদা পূরণ করতেই হবে ওমনি,

মনস্তাত্ত্বিক চাহিদা গুরুত্ব প্রাপ্ত বেশি এখানে,
নইলে এখুনি পেতে হবে, এ ধারণার বাস্তবায়ন জনপ্রিয়তা পেতো না প্রকৃত সমাজে,
কষ্ট কেন করবো যখন রাস্তা রয়েছে খোলা,
সুস্থ জীবন বানচাল করে, সামলানো দৈনন্দিন ধার দেনার ঝোলা,

অবচেতনের ক্ষনিকের সবুজ ইশারায় কতদিনের না ঘুম কাড়ে,
ধার করিয়াও জীবনশৈলী উন্নত করার বায়না ধরে,
টাকা উপার্জন ও খরচ ছাড়া সবকিছুই যেন অর্থহীন,
উপার্জনের পরিমানে নির্ভরশীল সাফল্যতার মাত্রা, বাকি সবের সাথে নাকি হেরো পার্টির বক্তব্যের বেশ মিল,

অর্থ জীবন পরিচালিত করে, এটাই গুরুত্ব কুড়িয়েছে,
অর্থ মানে শুধুই টাকা, বাকি সমস্ত অর্থ হারিয়েছে,
কম সময়ে সব করে ফেলতে হবে, নাজানি কিসের তাড়া,
ধীর গতি ও উপার্জনের মাধ্যম খোলার খুব কমই দেখা যায় প্রচেষ্টা,

উপায় রয়েছে যখন তখন কিছুই আর বলা যাবে না,
আরো চাই ও হিংসামূলক প্রবৃত্তির জন্ম, সমৃদ্ধি, গুন ছাড়া,
বাসনা কামনার ভারসাম্যের অবলুপ্তি ক্রমাগত ঘটেছে,
স্বমূল্যায়ন ও আত্মকেন্দ্রিক বিশ্লেষণের স্থান নিয়েছে বস্তুকেন্দ্রিক কৃতিত্ব ও ক্রয়ক্ষমতা টাকাতে,

জাগতিক চাহিদার গুরুত্ব বেড়েছে, বেড়েছে চাহিদা উন্নত জীবনশৈলীর,
তার জন্য পরিশ্রমের চেয়ে নাহয় একটু বেশি উত্তেজনাময় জীবনে অভ্যস্ত হলাম ওমনি,
অপরের মন্তব্যের প্রতি বেশি গুরুত্ব নিজ কর্ম ও সম্পর্ক দ্বারা প্রাপ্ত কৃতিত্বদের করলো ছোট, কখনো হলো বলি,
উত্তেজনায় রোগ বাসা বাঁধছে শরীরে, তার খরচ আর যত্ন কি দেবে ওই প্রতিবেশী?

আকাঙ্খা, আশা ছাড়া অসুম্পূর্ণ সব কিন্তু তার মাঝে নিজ কর্মের রয়েছে আনন্দ,
আকাঙ্খা কিছুদিন পর পূরণ হলে হয়তো কিছু যায় আসতো না কারো, আনন্দে রোগগুলো কম থাকতো,
তাড়াতাড়ি সব জাগতিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে, আপোষ করতে হতো না সাথে আয়ু ও সুস্থতা,
আয়ু ও সময়ের গুরুত্ব নাকি তারা বেশি বোঝে, যাদের এখুনি চাই পূরণে জাগতিক চাহিদা,

স্বাভাবিকের সংজ্ঞা পাল্টেছে, সবাই নাকি তা মানছে,
এই সবাই শব্দটাই দশক ও শতাব্দীতে কত না জীবন কাড়ছে,
সমাজ রোগ দেখছে, কারণ কেউ দেখে না,
দীর্ঘদিনের মানসিক চাপ, কচ্ছপের গতিতে নষ্ট করে, শরীর শীঘ্রই হয় ধূলিসাৎ, কেউ মেনেও মানে না,

জাগতিক চাহিদা বড়ো, নাকি মানুষের প্রাণ,
প্রিয়জন ছাড়া সমস্ত কিছুই উপভোগ্যতা হারায়, দূরদর্শিতাতে বোধয় পড়েছে টান,
অতীত প্রজন্মদের তুলনায় আমরা আজ অনেক ভালো আছি,
অনেক সুবিধে আজ বেশি, উপলব্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে চাঞ্চল্যতা ও অশান্তি,

স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্য থাকুক, পরিশ্রম ও কর্ম চলুক তুঙ্গে,
আদৌ কি এমন অভাব যে জীবন বৃথা সম্পদের মর্মে,
মানুষের প্রাণের গুরুত্ব বেশি, না থাকলে কে করবে উপভোগ, ছড়াবে প্রসন্নতা,
ক্ষেত্র নির্বিশেষে আজ সবই দামি, হারিয়েছে প্রাণের মূল্যতা। 

Leave a Reply